প্রশ্নঃ গীতায় বলা হয়েছে, মৃত্যুর সময় যদি কেউ কৃষ্ণপাদপদ্ম স্মরণ করতে পারে, সে পরমগতি প্রাপ্ত হয় । তা হলে সারা জীবন পাপকর্ম করেও যদি মরণকালে কৃষ্ণস্মরণ কেউ করে তারও উদ্ধার হবে ?
উত্তরঃ হ্যাঁ, সেও পরমগতি প্রাপ্ত হবে । কারণ যিনি শ্রীকৃষ্ণের শরণাগত হলেন, তার সমস্ত পাপ থেকে পরম নিয়ন্তা শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে উদ্ধার করবেন বলে শ্রীঅর্জুনকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন । অহং ত্বাং সর্বপাপেভ্যো মোক্ষয়িষ্যামি মা শুচঃ ।। ( গীতা 18/66 ) “আমি তাকে সমস্ত পাপ থেকে মুক্ত করব । এই বিষয়ে চিন্তা করার কিছু নেই ।”শেয়ারও করুন।
কিন্তু বিপদটি হচ্ছে সেইখানে যে, পাপীদের কাছে মৃত্যু যখন উপস্থিত হয়, সাধারণত শ্রীকৃষ্ণকে স্মরণ করবার মানসিকতা তাদের একটুও থাকে না । বিষয় ভোগ চিন্তায় অভ্যস্ত ব্যক্তির শ্রীকৃষ্ণপাদপদ্মে মতি স্থির হয় না । তার হৃদয়ে ভোগবাসনা জমা থাকার জন্য জন্ম-জন্মান্তর ধরে পশুপাখি কীটপতঙ্গাদি হয়ে এই জর জগতে তাকে বদ্ধ থাকতে হয় ।
শ্রীল ভক্তিবেদান্ত স্বামী প্রভুপাদ উল্লেখ করেছেন, “মৃত্যুর সময়ে আমাদের শেষ চিন্তাটি কি হবে তা নির্ভর করছে আমাদের জীবদ্দশায় আমরা কিভাবে কর্ম করছি তার উপর।” ( আত্মজ্ঞান লাভের পন্থা, 207 পৃঃ ) অর্থাত বুঝে নেওয়া উচিত এই যে, জীবদ্দশায় যদি আমরা ভগবদ-কর্মে নিয়োজিত না হই, কৃষ্ণভাবনার অনুশীলন না করি, তা হলে অবশ্যম্ভাবী আসন্ন মৃত্যু কখনই আমাদের পরমধামে উন্নীত হতে কৃষ্ণস্মরণের সুযোগ দেবে না । তাই বুদ্ধিমান ব্যক্তি জীবনের প্রথম থেকেই কৃষ্ণভজন করেন । কৌমার আচরেত্ প্রাজ্ঞঃ । শৈশব থেকেই হরিভজন কর উচিত । সব সময়ই শ্রীকৃষ্ণকে স্মরন করা উচিত এবং কখনই শ্রীকৃষ্ণকে বিস্মৃত হওয়া উচিত নয় ।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন