গত এপ্রিল ২০, ২০১৮ তারিখ অনুষ্ঠিত সভার কার্যবিবরণী শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিদের অবগতির জন্য ফেসবুকে পোষ্ট দিলাম। সকল সারথিকে কার্যবিবরণী মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য অনুরোধ করছি। আমি এখনও অসুস্থ। ডাক্তার কম্পিউটারে কাজ করার জন্য নিষেধ করছেন। তবুও প্রাণের তাগিদে বসতে হয়েছে। ভাষাগত এবং কম্পোজজনিত কোন ভুল-ভ্রান্তি থাকলে সারথিদের ক্ষমা-সুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য সবিনয় অনুরোধ করছি।

শারদাঞ্জলি ফোরাম 

অস্থায়ী প্রধান কার্যালয়, মল্লিক টাওয়ার, ৮ম তলা, ঢাকা


বিষয় ঃ এপ্রিল ২০, ২০১৮ তারিখে অনুষ্ঠিত জরুরী সভার কার্যবিবরণী।

 

গত এপ্রিল ২০, ২০১৮ তারিখ শুক্রবার সকাল ১১.০০ ঘটিকায় শারদাঞ্জলি ফোরাম-এর অস্থায়ী কার্যালয় দিকদর্শন প্রকাশনী লিঃ, মল্লিক টাওয়ার(৮ম তলা), চিত্তরঞ্জন এভিনিউ, ঢাকা-১০০০ অফিসে শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি এবং কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সভায় সভাপতিত্ব করেন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি এবং কেন্দ্রীয় সম্মেলন   প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক শ্রী রতন চন্দ্র পাল। এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত উপদেস্টা শ্রী লিটন চন্দ্র পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী অজিত রায়, নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী আশীষ কুমার দাশ। সভায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী উৎপল কুমার সাহা সহ বিপুল সংখ্যক সারথি উপস্থিত ছিলেন। সভায়  সঞ্চালকের দায়িত্ব পালন করেন শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতির মুখপাত্র এবং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শ্রী পলাশ চন্দ্র নাথ।  


সভাপতি এবং সম্মানতি অতিথিদের আসন গ্রহণের পর সভার প্রারম্ভে সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শ্রী রাজ মন্ডল শ্রীম˜ভগবদগীতা থেকে শ্লোক পাঠ করেন। 


এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী আশীষ কুমার দাশ সহ নারায়ণগঞ্জ উপজেলা বন্দর কমিটির নবনির্বাচিত সারথিগণ উপস্থিত কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত উপদেস্টা শ্রী লিটন চন্দ্র পাল, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল, সহ-সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল, সহ-সভাপতি শ্রী অজিত রায়কে ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে শ্রী রতন চন্দ্র পাল নারায়ণগঞ্জ উপজেলা বন্দর কমিটির নবনির্বাচিত সকল সারথিকে শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরামের সকল ধর্মীয় এবং মানবিক কর্মকাণ্ডে নারায়ণগঞ্জ উপজেলা বন্দর কমিটির সারথিগণ যথাযথ ভূমিকা পালন করে যাবেন। 


এরপর সঞ্চালক শ্রী পলাশ নাথ উপস্থিতিত সকল সারথিকে স্বাগতঃ জানিয়ে আজকের জরুরি সভার কার্যপ্রণালিসমূহ উত্থাপন করেন। তারই ধারাবাহিকতায় কার্যপ্রণালিসমূহ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয় এবং কার্যপ্রণালির আলোকে আলোচনা শেষে নিন্মোক্ত সিদ্ধান্তসমূহ গৃহীত হয় ঃ 


১.০ গত ডিসেম্বর ১, ২০১৭ ইং তারিখের সভার কার্যবিবরণী অনুমোদনঃ


গত ডিসেম্বর ১, ২০১৭ ইং তারিখে অনুষ্ঠিত সভায় নেয়া সিদ্ধান্তসমূহের কার্যবিবরণীর শ্রী পলাশ নাথ অদ্যকার সভায় পাঠ করে শোনান এবং উপস্থিত সারথিদের সর্বসম্মত সিন্ধান্ত মোতাবেক গত সভার কার্যবিবরণী অনুমোদিত হয়।


এরপর শারদাঞ্জলি ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক শ্রী সঞ্জয় ভৌমিক বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে প্রারম্ভে উপস্থিত সকল সারথিকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনেক আগেই হবার কথা ছিলো, কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল-এর অসুস্থতাজনিত কারণে সেটা অনেক পিছিয়ে গেছে। এই মুহূর্তে বড় আকারের সম্মেলন না-করে ছোট আকারে প্রত্যেক জেলা/মহানগর কমিটির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক এবং আহ্বায়ক কমিটি আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবকে আমন্ত্রণ জানিয়ে দিকদর্শন প্রকাশনা অফিসে সম্মেলন করার প্রস্তাব করেন। তবে যে সিদ্ধান্তই নেয়া হোক-না-কেন দ্রুত একটি কেন্দ্রীয় কমিটির করার গুরুত্ব আরোপ করে তিনি তার বক্তব্য সমপ্ত করেন। 


এরপর নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী আশীষ কুমার দাশ বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যে প্রথমেই উপস্থিত সকল সারথিকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় সম্মেলন নানা কারণে পিছিয়ে গেছে। বিশেষ করে কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পালের অসুস্থার কারণে সম্মেলন পিছিয়ে যায়। তিনি আরও বলেন যে, সম্মেলন পিছিয়ে যাবার কারণে কেন্দ্রীয় কমিটি গঠনও পিছিয়ে গেছে। নতুন কমিটি না-থাকায় ফোরামের কাজেও নানা শিথিলতা এসে গেছে। এজন্য দ্রুত কমিটি গঠনের পরামর্শ দেন। তিনি সঞ্জয় ভৌমিকের প্রস্তাবকে সমর্থন করে বলেন যে, প্রয়োজনে সীমিতিভাবে একটি সম্মেলন করা যেতে পারে। তিনি উপস্থিত সকল সারথির সুখ-শান্তি কামনা করে তার বক্তব্য সমাপ্ত করেন।

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি শ্রী অজিত কুমার রায় বক্তব্য প্রদান করেন। । তিনি তাঁর বক্তব্যে প্রথমেই উপস্থিত সকল সারথিকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি তার বক্তব্যে বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পালের অসুস্থতাজনিত কারণে কেন্দ্রীয় সম্মেলন পিছিয়ে গেছে। সম্মেলন পিছিয়ে যাবার কারণে কেন্দ্রীয় নতুন কমিটি গঠনও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে গেছে। নতুন কমিটি না-হওয়ায় ফোরামের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বিঘিœত হচ্ছে। তিনি অতিসত্বর বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৭ জন নির্বাহী পদে নির্বাচনের সুপারিশ করেন। পরবর্তীতে সময়-সুযোগ মত সম্মেলন করার প্রস্তাব করেন। এছাড়া তিনি গীতা ছাপানোর ব্যাপারটি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় নেয়ার পরামর্শ দিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন। 

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মানিত উপদেস্টা শ্রী লিটন চন্দ্র পাল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তাঁর বক্তব্যের প্রারম্ভে আজকের সভার সভাপতি, অতিথিবৃন্দ সহ উপস্থিত সকল সারথিকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন যে, তিনি শারদাঞ্জলি ফোরামে কাজ করতে পেরে নিজেকে গর্বিত মনে করেন। সম্প্রতি তিনি একটি ব্যক্তিগত সফরে ময়মনসিংহ গিয়েছিলেন। ময়মনসিংহ জেলা কমিটি সভাপতি যিনি একজন সম্মানিত শিক্ষক, তিনি সহ জেলা কমিটির সারথিরা যেভাবে তাকে সম্মান এবং আতিথিয়তা দিয়েছেন- এটার কোন তুলনাই হয়না। এজন্য তিনি অভিভূত। তিনি ময়মনসিংহ জেলার সকল সারথিকে তাকে সম্মান জানানো এবং আতিথিয়তা দেয়ার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পালের অসুস্থার কারণে সম্মেলন স্থগিত হয়ে আছে। তৃণমূলের সারথিরা কাজ করে যাচ্ছে, অথচ নতুন কমিটি না-হওয়াতে কেন্দ্রে অনেকটা স্থবিরতা বিরাজ করছে। তিনি আগামী এক সপ্তার মধ্যে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৭ জন নির্বাহী পদে নির্বাচনের সুপারিশ করেন। এরপর সময়-সুযোগ মত পূর্ণাঙ্গ কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি বড় সম্মেলন করার প্রস্তাব করেন। তিনি আরও বলেন, আমরা যে যার অবস্থান থেকে ব্যস্ত সময় পার করছি। কেউ ব্যবসা করছি, কেউ চাকরি করছি, ফোরামের অনেক ছাত্র আছে। তারপরও সংগঠনের জন্য আমাদের সময় দিতে হবে।  তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরমের নিবেদিতপ্রাণ সারথি সুমন ধর বিদেশ চলে যাচ্ছে জীবিকার প্রয়োজন। তার মত একজন কর্মঠ সারথি এই মুহূর্তে দেশের বাইরে চলে যাওয়া ফোরামের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি। তিনি সুমন ধরের নতুন কর্মজীবনের সফলতা কামনা করেন। সুমন ধর যেখানেই থাকুনা না কেন শারদাঞ্জলি ফোরামের জন্য কাজ করে যাবেন বলেই প্রত্যাশা করেন। তিনি আরও বলেন যে, যেহেতু নানা কারণে গীতা ছাপানোর কাজ পিছিয়ে গেছে তাই, জরুরিভিত্তিতে চাহিদা বিবেচনা করে কিছু গীতা ক্রয়ের প্রস্তাব দেন। প্রয়োজনে তিনি এজন্য আর্থিক সহযোগিতা দেবার প্রতিশ্র“তি দেন। এ প্রসংগে তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরাম নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী আশীষ দাশ নিজ উদ্যোগে ১০০ গীতা ক্রয় করেছেন।  এই গীতাগুলো দিয়ে নারায়ণগঞ্জে গীতা নিকেতন প্রতিষ্ঠা করা হবে। এজন্য তিনি শ্রী আশীষ দাশকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরামের বর্তমান কমিটি তিন বছর অত্যন্ত দক্ষতার সাথে কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। এজন্য তিনি আজকের সভায় উপস্থিত কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল পাল, শ্রী রতন পাল, শ্রী অজিত রায় সহ সকল সারথিকে ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন যে, বিভিন্ন জেলায় শারদাঞ্জলি সারথিরা বহুমাত্রিক চেতনায় উদ্ভুদ্ধ হয়ে রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ গ্রহণ করছেন। এটা খুবই মহতী একটি কার্যক্রম। এজন্য তিনি শারদাঞ্জলি ফোরামের তরুণ সারথিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরাম কুমিল্লা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ কুমিল্লা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক পদে প্রার্থী হয়েছেন। তিনি যাতে নির্বাচিত হন, এজন্য তিনি তার প্রতি শুভেচ্ছা জানান। তিনি আরও বলেন যে, আমরা সবাই শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথি। শারদাঞ্জলি ফোরাম আমাদের পরিবার। আমরা কে পদে আছি বা কে পদে আসবো সেটা বড় কথা নয়, আমরা সবাই মিলে-মিশে কাজ করে যাবো। তবে তিনি বলেন, যে, গত তিনি বছরের অভিজ্ঞতা, দক্ষতা, আচার-আচরণ, ফোরামের প্রতি আনুগত্য এবং বিশ্বস্ততা বিবেচনা করে কমিটি গঠন করার পরামর্শন দিয়ে আবারও সবাইকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি তার বক্তব্য শেষ করেন।

এরপর কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র  পাল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি বক্তবের প্রারম্ভে আজকের সভার সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল, সম্মানিত অতিথি শ্রী লিটন চন্দ্র পাল, শ্রী অজিত রায়, শ্রী আশীষ কুমার দাস সহ উপস্থিত সকল সারথিকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। তার অসুস্থতাজনিত কারণে সম্মেলন পিছিয়ে যাওয়ায় তিনি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন যে, অসুস্থ হবার পর শারদাঞ্জলি ফোরামের সর্বস্তরের সারথিরা তার সুস্থতার জন্য প্রার্থনা জানিয়েছেন। এজন্য তিনি সারথিদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। তিনি বলেন, গত অক্টোবর ৩১, ২০১৭ তারিখে বর্তমান কমিটির মেয়াদ পূর্ণ হয়ে যায়। অক্টোবর ২৭, ২০১৭ তারিখের সভায় নতুন কমিটির গঠনের উদ্দেশ্যে শ্রী রতন চন্দ্র পালকে আহ্বায়ক এবং শ্রী দিলীপ কুমার সাহাকে সদস্য সচিব করে ১১ সদস্যের একঢি আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। দীর্ঘ ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও সম্মেলন না-হওয়ার কারণে নতুন কমিটি গঠন বিলম্বিত হচ্ছে। গঠনতন্ত্র মোতাবেক নতুন কমিটি গঠন করার সাথে সাথেই বর্তমান কমিটি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু বর্তমান কমিটি রুটিনমাফিক কাজ ছাড়া নীতিনির্ধারণী কোন কাজ করতে পারছে না বলে কেন্দ্রীয় কমিটিতে অনেকটা স্থবিরতা এসে গেছে। তাই অতিসত্বর নতুন কমিটি হওয়া প্রয়োজন। তিনি বলেন যে, শ্রী সঞ্জয় ভৌমিক এবং শ্রী আশীষ দাশ সম্মেলন নিয়ে যে প্রস্তাব করেছেন, সেটাও গ্রহণযোগ্য। কিন্তু ইতিমধ্যে সারা বাংলাদেশের তৃণমূলের সারথিদের সাথে তিনি ফোনে আলাপ করেছেন। তারা অনেকেই কেন্দ্রীয় সম্মেলনে অংশ গ্রহণের জন্য প্রত্যাশা করে আছেন। শুধু মাত্র জেলা/মহানগর কমিটি থেকে দুজনকে আমন্ত্রণ জানালে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হতে পারে। তিনি শ্রী অজিত রায় এবং শ্রী লিটন পালের সুপারিশের সাথে একমত পোষণ করে বলেন যে, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বর্তমান আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৭ জন নির্বাহী পদে নির্বাচনের করা যেতে পারে। এরপর সময়-সুযোগ মত পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পর অভিষেক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে একটি বড় সম্মেলন করা যেতে পারে। গীতা ছাপানো প্রংসগ বলেন যে, ইতিমধ্যে দুইবার গীতা কম্পোজ করা হয়েছিল, কিন্তু কম্পোজজনিত জটিলতার কারণে বার বার ১০ হাজার গীতা ছাপানো পিছিয়ে যাচ্ছে। এখন নতুন করে গীতা কম্পোজ শুরু হয়েছে। এখন গীতা বোর্ডের মহাসচিব শ্রী রতন চন্দ্র পাল নিজ দায়িত্বে কাজ করছেন। আশা করছি আগামী তিন/চার মাসের মধ্যে গীতা ছাপানোর কাজ সম্পন্ন হবে। তিনি জরুরিভিত্তিতে গীতা ক্রয়ের ব্যাপারে শ্রী লিটন পালের সুপারিশকে সমর্থন জানান। তিনি আরও বলেন যে, সুমন ধর জীবিকার তাগিদে আগামী ৩০ এপ্রিল দেশে বাইরে চলে যাচ্ছে। তার মত একজন দক্ষ সারথির এই মুহূত্বে দেশ ছেড়ে চলে যাওয়া ফোরামে জন্য বেশ ক্ষতির কারণ। তিনি সুমনের ভবিষ্যৎ সুন্দর জীবন কামনা করেন। আজকের সভায় মিষ্টিমুখ করানোর জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির উপদেষ্টা শ্রী লিটন চন্দ্র পাল এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি শ্রী আশীষ কুমার দাসকে ধন্যবাদ জানিয়ে উপস্থিত সকল সারথিকে সভায় অংশ গ্রহণের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বক্তব্য শেষ করেন।

এরপর বক্তব্য প্রদান করেন কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি এবং কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহ্বায়ক শ্রী রতন চন্দ্র পাল। তিনি প্রথমেই উপস্থিত আজকের সভার সম্মানিত অতিথি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল, শ্রী লিটন চন্দ্র পাল, শ্রী অজিত রায়, শ্রী আশীষ কুমার দাস সহ উপস্থিত সকল সারথিকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য আরম্ভ করেন। তিনি বলেন যে, শারদাঞ্জলি ফোরাম গত তিনি বছরে সারা বাংলাদেশে অনেকগুলো জেলায় কার্যক্রম পরিচালনা করতে সক্ষম হয়েছে। চট্টগ্রাম জেলায় জেলা কমিটি, মহানগর কমিটি সহ উপজেলা, থানা এবং ইউনিয়ন কমিটিও গঠিত হয়েছে। সারথি সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। শুধু সম্মেলন করলেই হবে না। সম্মেলনকে সফলও করতে হবে। এজন্য প্রস্তুতি এবং সময়ের প্রয়োজন। অতীতের সম্মেলন নিয়ে নানা তিক্ত  অভিজ্ঞতা আছে। তিনি বলেন যে, সম্মেলনের জন্য একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। বাজেটও হয়েছিল। কিন্তু কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল  হঠাৎ করে গুরুতরভাবে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্ত্তি হাওয়ায় সম্মেলন স্থগিত হয়ে যায়। সামনে রমজান আসছে এবং বৃষ্টি-বাদল- এসব বিবেচনায় রেখে তিনিও আপাতত সম্মেলন স্থগিত রেখে কমিটির গঠনের উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। আগামী এক সপ্তার মধ্যে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৭ জন নির্বাহী সারথি নির্বাচন করার প্রস্তাব করেন। আজকে সিদ্ধান্ত হলে কমিটি গঠনের ব্যাপারে তিনি উদ্যোগ নেবেন। গত তিনি বছর ধরে জেলা, মহানগর কমিটি সহ তৃণমূলের সারথিরা সফলভাবে কার্যক্রম পরিচালনা বিশেষ করে গীতা শিক্ষায় সুন্দর ভূমিকা রেখে চলেছেন। এজন্য তিনি জেলা, মহানগর কমিটি সহ তৃণমূলের সারথিদের ধন্যবাদ জানান। এ প্রসংগে তিনি বলেন যে, সন্দ্বীপ উপজেলা কমিটির উদ্যোগে তাদের অভিষেক অনুষ্ঠানে গীতা যজ্ঞ সহ বড় ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। তারা তাকে অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। কিন্তু ব্যবসায়িক ব্যস্ততার কারণে তার পক্ষে যাওয়া সম্ভব হয়নি। এজন্য তিনি আজকের সভায় আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন যে, কেন্দ্রীয় কমিটি গত তিন বছরে শ্রী বাবুল চন্দ্র পালের নেতৃত্বে অনেক সাফল্য দেখিয়েছে- এজন্য তিনি কেন্দ্রীয় কমিটির সকল সারথিকেও ধন্যবাদ জানান। গীতা ছাপানোর ব্যাপারে তিনি খুবই দুঃখ প্রকাশ করেন। এবার আর কোন সমস্য হবে না বলে তিনি জানান। আগামী তিন মাসের মধ্যে গীতা ছাপানোর কাজ শেষ হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। এজন্য তিনি নিজেই গীতা কম্পোজের দায়িত্ব নিয়েছেন। উপস্থিত সকল সারথিকে  আজকের সভায় উপস্থিত থাকার জন্য ধন্যবাদ জানান। 

এরপর আজকের সভার আলোচ্যসূচি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিুোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ

২.০ আগামী কেন্দ্রীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ ঃ

 কেন্দ্রীয় ত্রিবার্ষিক সম্মেলনের প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা শেষে নিন্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়ঃ

২.১ সম্মেলন আপাতত স্থগিত রাখা হলো। নতুন কমিটি গঠনের পর সময় সুযোগ মত সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এব্যাপারে পরবর্তীতে তারিখ সকল সারথিকে জানিয়ে দেয়া হবে।

৩.০ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি গঠন নিয়ে আলোচনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

 আজকের অতিথিদের বক্তব্য এবং সুপরিশসমূহ বিবেচনা করে নিন্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ

৩.১ অতি দ্রুত নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আহ্বায়ক কমিটির আহ্বায়ক শ্রী রতন পালকে দায়িত্ব দেয়া হয়। 

৩.২ সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক সহ ৭ জন নির্বাহী সারথি এখন নির্বাচিত করা হবে। পরবর্তীতে এই সাত নির্বাহী নিজেরা একান্তে বসে ধাপে ধাপে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করবেন এবং সেটা ফেসবুকে সময়ে সময়ে তৃণমূলের সারথিদের জানিয়ে দেবেন।  

৪.০ সাতক্ষীরা জেলার অন্তর্গত শ্রীশ্রী হরিদাস ঠাকুর জন্মভিটায় নদীতে ঘাট নির্মাণের জন্য প্রতিশ্র“ত ৫০,০০০.০০ টাকার অনুদানের অর্থ সংগ্রহ নিয়ে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণঃ

 এব্যাপারে শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল সভাকে জানান যে, সাতক্ষীরা জেলা কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে শ্রীশ্রী হরিদাস ঠাকুর জন্মভিটায় সংলগ্ন নদীতে ঘাট নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় কমিটির পক্ষ থেকে ৫০,০০০ টাকা অনুদান দেয়া প্রতিশ্র“তি দেয়া হয়েছিল। বর্তমানে ঘাট নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে। শ্রীশ্রী হরিদাস ঠাকুর জন্মভিটা কমিটির পক্ষ থেকে প্রতিশ্রত অনুদানের অর্থ প্রদানের জন্য সাতক্ষীরা জেলা কমিটির সভাপতিকে অনুরোধ করেছে। প্রতিশ্র“ত অনুদানের অর্থ পাঠানোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয়ার জন্য তিনি সভায় উপস্থিত সারথিদের অনুরোধ জানান। এব্যাপারে  বিস্তারিত আলোচনা শেষে নিন্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

৪.১ শ্রীশ্রী হরিদাস ঠাকুর জন্মভিটা সংলগ্ন নদীতে ঘাট নির্মাণের জন্য প্রতিশ্র“ত ৫০,০০০ টাকা শ্রীশ্রী হরিদাস ঠাকুর জন্মভিটা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেয়া সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। 

৪.২ যেহেতু কেন্দ্রীয় ফাণ্ডে পযাপ্ত অর্থ নেই, তাই সারথিদের থেকে অনুদান সংগ্রহের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। আজকের সভায় উপস্থিত সারথিবৃন্দ থেকে তাদের সম্মতিতে নিন্মোক্ত অনুদানের প্রতিশ্র“তি পাওয়া যায়ঃ

 ক) শ্রী বাবুল চন্দ্র পাল -   ৫,০০০.০০ টাকা

 খ) শ্রী লিটন চন্দ্র পাল - ১০,০০০.০০ টাকা

 গ) শ্রী রতন চন্দ্র পাল - ১০,০০০.০০ টাকা

 ঘ) শ্রী অজিত রায় -   ৫,০০০.০০ টাকা

 ঙ) শ্রী আশীষ কুমার দাস -   ৫,০০০.০০ টাকা

 চ) শ্রী দেবাশীষ পাল -   ৫,০০০.০০ টাকা

৪.৩ প্রতিশ্র“ত মোট ৪০,০০০ টাকা সংগ্রহ করার জন্য শ্রী রতন চন্দ্র পালকে দায়িত্ব দেয়া হয়। তিনি আরও ১০,০০০ টাকা সারথিদের থেকে সংগ্রহ করে মোট ৫০,০০০ টাকা শ্রীশ্রী হরিদাস ঠাকুর জন্মভিটা কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেবেন।


৫.০  নতুন গীতা ছাপানোর কার্যক্রম সম্পর্কে সভাকে অবহিতকরণ। 


 নতুন গীতা ছাপানোর প্রক্রিয়া অনেক আগেই শুরু হয়েছিলো। কিন্তু টাইপিং সংক্রান্ত কিছু সমস্যার কারণে ছাপাতে বিলম্বিত হচ্ছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে যাতে ১০ হাজার গীতা ছাপানো যায়- এব্যাপারে সর্বাÍক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আলোচনা শেষে নিন্মোক্ত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়ঃ


৫.১ আগামী তিন মাসের মধ্যে যাতে নতুন গীতা পাওয়া যায় এব্যাপারে এব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য গীতা বোর্ডের মহাসচিব শ্রী রতন চন্দ্র পালকে দায়িত্ব দেয়া হয়।


৫.২ নতুন গীতা নিকেতন প্রতিষ্ঠার আবেদন বিবেচনা করে জরুরিভিত্তিতে ৫০০ গীতা ক্রয়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। গীতা ক্রয়ের অর্থ সারথিদের থেকে সংগ্রহের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। এব্যাপারে যথাযথ পদক্ষেপ নেয়ার জন্য গীতা বোর্ডের মহাসচিব শ্রী রতন চন্দ্র পালকে দায়িত্ব দেয়া হয়।


পরিশেষে শারদাঞ্জলি ফোরামের সারথিদের মঙ্গল কামনা করে সভাকে সাফল্যমন্ডিত করার জন্য উপস্থিত সারথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে সভার সভাপতি শ্রী রতন চন্দ্র পাল আজকের জরুরী সভার সমাপ্তি ঘোষণা করেন।


রতন চন্দ্র পাল

আহ্বায়ক

কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি এবং কেন্দ্রীয় সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটি

শারদাঞ্জলি ফোরাম

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

ক্ষমা প্রার্থণা মন্ত্র

যদি ব্রজের লতা হইতাম, বৃক্ষ মূলে পড়ে থাকতাম। ভক্ত, বৈষ্ণব হেঁটে যেতে, তাদের চরণ ধূলা লইতাম।। লতা হয়ে শ্রীকৃষ্ণ পেল। আমার মানব জনম বৃথা গেল।। তাই শ্রীগুরুদেব। প্রভুপাদ শ্রীল চৈতন্য সুন্দর গোস্বামীজী বলেছেন? পেয়ে জনম হারাইলে আরকি জনম হবে। এমন সেই জনম পেয়ে ভজলাম না মাধবে।। জয় শ্রীকৃষ্ণ চৈতন্য প্রভু নিত্যানন্দ শ্রীঅদ্বৈত গদাধর শ্রীবাসাদি গৌর ভক্তবৃন্দ।। হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।